দুবাইতে কোম্পানি সেটআপ করার উপায়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৃহত্তম শহর দুবাই বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ও নিরাপদ পর্যটন এলাকাগুলো অন্যতম।এই শহর জনপ্রিয় হওয়ার অন্যতম কারনগুলা হলো,
এখানে পৃথিবীর সেরা অনেক প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা রয়েছে।এছাড়া এখানে ব্যবসা বানিজ্য করার জন্য বিদেশি নাগরিকদের যথেষ্ট সুবিধা প্রদান করে।বিশেষ করে এখানে ট্যাক্স সুযোগ সুবিধা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় খুবই সামান্য।
আজকের আর্টিকেলে আমরা দুবাইতে ব্যবসা শুরু করার গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য শেয়ার করবো যা বাংলাদেশি দুবাইতে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক নাগরিকদের কিছুটা হলেও উপকার হবে বলে আশা করছি।
জেনে রাখা দরকার, আমরা নিচে ব্যবসা শুরু করার সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার আলোচনা করেছি যার প্রতিটির গুরুত্ব সমান।তাই কোন তথ্য এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
এই আর্টিকেলে যা যা থাকবে
▪️কারা ব্যবসা শুরু করতে পারবে
▪️ব্যবসার লোকেশন নির্বাচন
▪️ব্যবসার ধরণ নির্বাচন
▪️ইনিশিয়াল এপ্রুভাল
▪️ব্যবসার নাম নিবন্ধন
▪️লোকালের (আরবির) সংযুক্ততা
▪️চুক্তিপত্র (MOA)
▪️অফিস ভাড়া
▪️লাইসেন্সের জন্য আবেদন
▪️এস্টাবলিশমেন্ট কার্ড
▪️ইনভেস্টর বা পার্টনার ভিসা প্রসেসিং
▪️প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
▪️লেবার আপডেট ও সিগনেচার কার্ড
▪️প্রয়োজনীয় অনুমোদন
▪️ব্যাংক একাউন্ট
▪️ট্যাক্স নিবন্ধন
▪️খরচ
▪️বিজনেস সেটআপ প্রতিষ্ঠান সমূহ
◾কারা ব্যবসা শুধু করতে পারবেঃ
পৃথিবীর যেকোন দেশে অবস্থানকারী যেকোন মানুষ দুবাইতে কোম্পানি শুরু করতে পারবে।তবে এজন্য তার দুবাই শহরে কখনো এসেছেন ভিসা নিয়ে অথবা ভিসা করেছেন এমন একটি ডকুমেন্ট লাগবে।কারন এখানে লাইসেন্স করতে গেলে একটি ইউনিফাইড নাম্বার প্রদান করতে হয় যা শুধুমাত্র ভিসায় থাকে।
◾ব্যবসার লোকেশন নির্বাচনঃ
এই শহরে সাধারণত দুই পরিবেশে ব্যবসা করার সুযোগ রয়েছে।যথা,
১. ফ্রি জোন
২. মেইনল্যান্ড।
ফ্রি জোনঃ
ফ্রি জোন মানে যেখানে ১০০% বিদেশি মালিকানাধীন ব্যবসা পরিচালিত হয়ে থাকে এবং কোন কর্পোরেট টেক্স নেই।এটাকে আন্তর্জাতিক ব্যবসা কেন্দ্র ও বলা যায় সেখানে নির্দিষ্ট আইন কানুনের অনুসরণ করে সম্পূর্ণ ঝামেলামুক্ত উপায়ে ব্যবসা করা যায়।ফ্রি জোনের একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো আপনার অফিস সহ সকল কার্যক্রম ফ্রি জোনের নির্ধারিত এলাকার মধ্যে হতে হবে।
মেইনল্যান্ডঃ
মেইনল্যান্ড হলো ফ্রি জোন ছাড়া অবশিষ্ট এলাকা সমূহ।মানে নির্দিষ্ট ফ্রি জোন এলাকা ছাড়া অবশিষ্ট সম্পূর্ণ এলাকাই হলো মেইনল্যান্ড বা মূল শহর।
আজকে আমরা মূলত মেইনল্যান্ডে বিজনেস সেটাপ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করবো।তবে মূল নিয়ম প্রায় সমান উভয় জায়গার জন্য।
◾ব্যবসার ধরণ নির্বাচনঃ
এখানে প্রধাণত ৫ ধরণের লাইসেন্স করার সুযোগ রয়েছে।যার কোনটি করবেন তা আপনার উপর নির্ভর করে।যথা,
১. পেশাদার লাইসেন্স (Occupational Licence)
২. ট্যরিজম (Tourism)
৩. বানিজ্যিক (Commercial)
৪. ইন্ডাস্ট্রিয়াল (Industrial)
৫. কৃষি ইন্ডাস্ট্রি (Agriculture)
বিস্তারিত,
পেশাদার লাইসেন্সঃ
এটি হলো একেবারে সাধারণ ধরণের কোম্পানি যেখানে আপনি একটি কোম্পানি তৈরী করে নিজের মতো করে একটি ছোট ব্যবসা পরিচালনা করবেন।যা হতে পারে ড্রাইভিং, ফ্রিলান্সিং বা এমন কিছু।এসব ব্যবসায়ের জন্য কোন সরাসরি অফিসের ও প্রয়োজন নেই।
ট্যুরিজমঃ
দুবাই শহর ট্যুরিজমের জন্য বিশ্ববিখ্যাত।এজন্য যেকেউ চাইলে এখানে ট্যুরিজম ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে।ট্যুরিজম মানে কাউকে তার পছন্দের কোন জায়গায় সময় অতিবাহিত করার জন্য সকল ব্যবস্থা করে দেয়া।যেমন কেউ কক্সবাজার অবকাশ যাপন করতে যাবে।তার যাওয়া থেকে আসা পর্যন্ত সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা করে দেয়াই ট্যুরিজমের কাজ।এর মধ্যে থাকতে পারে, যাওয়া আসা বিমান টিকেট বা গাড়ির টিকেট, হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স (যদি দরকার হয়), ট্যুর গাইড ইত্যাদি।
বানিজ্যিকঃ
এর মানে হলো যেকোন পণ্য দ্রব্য ও সেবা বিক্রয়ের জন্য ব্যবসা শুরু করা। যা হতে পারে মুদি দোকান থেকে শুরু করে ক্লিনিক পর্যন্ত।
হতে পারে আপনি একটি টেকনিক্যাল সার্ভিস সেবা দিতে একটি কোম্পানি তৈরী করবেন।এটাও বানিজ্যিক কোম্পানির একটি ধরণ।
ইন্ডাস্ট্রিয়ালঃ
মানে হলো আপনি কোনকিছু উৎপাদন করার জন্য কোন শিল্প কারখানা স্থাপন করবেন।সেটা হতে পারে সিমেন্ট বা সার কারখানা।
কৃষিঃ
এটি পৃথিবীর সকল দেশে সমান জনপ্রিয় ব্যবসা।কৃষি উৎপাদন সংক্রান্ত যেকোন ব্যবসা দুবাইতে করা যেতে পারে ইত্যাদি।
◾ইনিশিয়াল এপ্রুভালঃ
ইনিশিয়াল এপ্রুভাল হলো, দুবাইতে কোম্পানি সেটাপ করার জন্য সরকারের নির্দিষ্ট শাখা Department Of Economic Development থেকে প্রাথমিক অনুমোদন নেয়া।এটির কাজ হয়েগেলে পরবর্তী ধাপ অনুসরণ করা।
◾ব্যবসার নাম নিবন্ধনঃ
নাম নিবন্ধন হলো ব্যবসায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।দুবাই শহরে ব্যবসা করার জন্য নাম নিবন্ধন নেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু দিক মাথায় রাখতে হবে।
যথা, এটি অবশ্যই ইসলামি বা কোন ধর্মীয় মূল্যবোধ বা আইনবিরোধী কিছু নির্দেশ না করে।
তাছাড়া নাম চয়নের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে, আপনাকে অনেকগুলো নাম আপনার পছন্দের তালিকায় রাখতে হবে।কারন যদি আপনার পছন্দের নামটি ইতোমধ্যে অন্য কেউ নিবন্ধন করে রাখে তাহলে সেটা আপনি আর পাবেন না।এজন্য বিকল্প রাখতে হয়।
◾লোকাল বা আরবির সম্পৃক্ততা
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমৃদ্ধ ও জনপ্রিয় শহর দুবাইতে ব্যবসা করার জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে একজন লোকাল নাগরিককে বাধ্যতামূলক ভাবে ব্যবসায়ের অংশীদার বা এজেন্ট হিসেবে রাখতে হয়।তবে সকল ব্যবসার ক্ষেত্রে নয় এটি।সাধারণত শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে লোকাল এজেন্ট নিয়োগ দেয়া বাধ্যতা মূলক হয়ে যায়।এছাড়া ব্যাংক বা এমন কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান করার ক্ষেত্রেও লোকাল স্পন্সর বাধ্যতামূলক।তবে সাধারণ ব্যবসা করার ক্ষেত্রে লোকাল রাখা বাধ্যতামূলক নয় এবং লোকাল না রেখে ব্যবসা করাই ভালো।
◾চুক্তিপত্র বা মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন (MOA):
মেমোরেন্ডাম হলো চুক্তি পত্র।যদি অংশীদারি প্রতিষ্ঠান হয় মানে কয়েকজনের শেয়ারে প্রতিষ্ঠান হয় তাহলে মেমোরেন্ডামে চুক্তির বিস্তারিত লেখা থাকে।অর্থ্যাৎ এটি একটি চুক্তিনামা।এখানে উভয় পক্ষেরই চুক্তি লেখা হয়। একপক্ষ যারা ব্যবসা করবে আর অন্যপক্ষ হচ্ছে সরকার।সরকারের যেসব আইন মানতে হবে তাও এখানে লেখা হয়ে থাকে।
◾অফিস ভাড়া নেয়াঃ
মেমোরেন্ডামের কাজ হওয়ার পর আসে অফিসের বিষয়।এটাকে ইজারি বা টেনেন্সি বলে।মানে আপনি যে ব্যবসা পরিচালনা করবেন এই জন্য তো অফিস বা দোকান নিতে হবে।এটাই হলো ইজারি।এখানে সাধারণত ২ ভাবে অফিস নেয়া যেতে পারে।সরাসরি ও ভার্সুয়ালি।সরাসরি মানে আপনি নিজেই একটি রুম বা অফিস নিয়েছেন যেখানে রেজিষ্ট্রেশন করে আপনি ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করবেন।অন্যটি হলো ভার্সুয়াল।মানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনলাইনের মাধ্যমে তাদের রেজিষ্ট্রেশন করা রুম অন্যদের অফিসের জন্য ভাড়া দেয়।এতে আপনি নিয়মিত ওই অফিস ব্যবহারের সুযোগ পাবেন না।এটা শুধুমাত্র সরকারি কোন তদন্ত প্রতিবেদন থাকলে উক্ত প্রতিষ্ঠান আপনার হয়ে তাদের অফিস শো করবে।তখন তদন্ত কর্মকর্তা বুঝতে পারবে যে এটা প্রকৃতপক্ষে আপনার অফিস।এর উপর নির্ভর করে আপনি বিভিন্ন সরকারি এপ্রুভাল পাবেন কিনা।তবে অতো জটিল প্রক্রিয়া না এটি।
যারা সাধারণত অফিস ছাড়া ব্যবসা করতে চাই এটি তাদের জন্য সুবিধাজনক।মানে কেউ ক্লিনারের কাজ অর্ডার নিবে বিভিন্ন কোম্পানি থেকে।তখন তাকে লাইসেন্স শো করাতে হয় কিন্তু অফিস না দেখেও বিভিন্ন কোম্পানি কাজ দিতে পারে।
◾লাইসেন্সের আবেদন ও ফি পেমেন্টঃ
এরপর আসে লাইসেন্সের জন্য Department of Economic Development এর নিকট আবেদন করা।সবকিছু ঠিকঠাক জমা করলে তারা পেমেন্ট করতে বলবে নির্দিষ্ট এমাউন্ট।তখন নির্দিষ্ট এমাউন্ট পরিশোধ করার মিনিটের মধ্যে আপনি আপনার স্বপ্নের লাইসেন্স পেয়ে যাবেন।
◾এস্টাবলিশমেন্ট কার্ডঃ
দুবাইতে কোম্পানি সেটআপের সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে আলাদা অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো এস্টাবলিশমেন্ট কার্ড বা ইমিগ্রেশন কার্ড।এটির মাধ্যমে ইমিগ্রেশনের সকল কাজ মানে ভিসা সংক্রান্ত কাজগুলো করতে হয়।অনেক সময় আপনি কোম্পানির মালিক হওয়ার পরও কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ হারাবেন যদি এখানে আপনার নাম না থাকে আবার এখানে একাধিক ব্যক্তির নামও থাকতে পারে যাদের প্রত্যেকের পাওয়ার সমান থাকবে।আপনি যদি কোম্পানির ১০০% মালিক হন এবং একজন হচ্ছে ম্যানেজার।যদি এস্টাবলিশমেন্ট কার্ডে ২ জনের নাম থাকে তাহলে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত কাজ দুই জনেই সমান অধিকারে করতে পারবেন।এখানে পাওয়ার আপনার যা, তারও তা।তাই কারো নাম এস্টাবলিশমেন্ট কার্ডে নাম যুক্ত করার আগে আরো বিস্তারিত ভাবতে হবে।
◾ভিসা প্রসেসিংঃ
লাইসেন্স হওয়ার পর প্রয়োজন হয় ভিসা প্রসেসিং।যারা কোম্পানির মালিক তারা ভিসা না করলে ব্যবসা করবে কিভাবে।তবে দুবাইতে না থাকলে তো আর ভিসা লাগবে না।ভিসার ক্ষেত্রে বর্তমানে অনেকগুলো নিয়ম নীতি আছে।ছোট কোম্পানির ক্ষেত্রে একটি লাইসেন্সে ২ জনের পার্টনার ভিসা হবে না।
জেনে রাখা ভালো, ইনভেস্টর ও পার্টনার ভিসার মধ্যে পার্থক্য হলো যদি কোন ব্যক্তি কোম্পানির ১০০% মালিক হন তাহলে তিনি এই কোম্পানির ইনভেস্টর এবং ইনভেস্টর ভিসা পাবেন।আর কোম্পানি যদি শেয়ারে হয় তাহলে তা হবে পার্টনার এবং ভিসা পাবে পার্টনার।
ইনভেস্টর ভিসার ক্ষেত্রে সাধারণত কোন ঝামেলা হয় না।কিন্তু পার্টনার ভিসার ক্ষেত্রে যদি শেয়ার কারো নামে সাধারণত ৮০% এর বেশি থাকে তাহলে পার্টনার ভিসা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
◾প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
যা যা দরকারঃ
১. পাসপোর্ট কপি
২. পাসপোর্ট সাইজ ছবি
৩. পাসপোর্ট সহ একটি ছবি বা হোল্ডিং পাসপোর্ট ছবি
৪. ভিসা কপি বা UID নাম্বার
৫. লোকালের ডকুমেন্টস (প্রয়োজনে) ইত্যাদি।
◾লেবার আপডেট ও সিগনেচার কার্ডঃ
লেবার আপডেট হলো কোম্পানির প্রাথমিক সকল কাজ শেষ করার পর কর্মী নিয়োগের জন্য মিনিট্রি অব লেবারে রেজিস্ট্রেশন করা।এর মাধ্যমে আপনি কয়েকজন কর্মী নিয়োগ দেয়ার জন্য কিছু কোটা পাবেন।কোটা অনুযায়ী কর্মী নিয়োগ করে ভিসা প্রসেসিং করতে পারবেন।
সিগনেচার কার্ডঃ সিগনেচার কার্ড হলো, কোম্পানির লেবার মিনিস্ট্রির কাজগুলো করার জন্য অনুমোদিত হওয়ার ডকুমেন্ট।মানে কর্মীদের ভিসা করার পূর্বে লেবার অফিসের মাধ্যমে অফার লেটার, লেবার এপ্রুভাল ও লেবার ফিস পরিশোধ করতে হয়।এটির জন্য সিগনেচার কার্ড প্রয়োজন।
◾প্রয়োজনীয় অনুমোদনঃ
কোম্পানি তৈরী করার জন্য সরকারের বিভিন্ন অফিস থেকে অনুমোদন নিতে হয়।তবে সব কোম্পানির ক্ষেত্রে অনুমোদন নিতে হয় না।
ট্যুরিজম কোম্পানির জন্য সিভিল এভিয়েশন থেকে অনুমতি নিতে হয়।সেখানে নির্দিষ্ট এমাউন্ট ডিপোজিট করতে হয়।
ক্লিনিক্যাল সেবার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিতে হয়।
এছাড়া সকল কোম্পানি দুবাই চেম্বার অব কমার্সের আওতায় রেজিষ্ট্রেশন করতে হয়।
◾ব্যাংক একাউন্ট ওপেনিং
উপরের সকল কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর প্রয়োজন হয় ব্যাংক একাউন্ট খোলার।ব্যাংক একাউন্ট ছাড়া আর্থিক লেনদেন সম্ভব নয়।কোন কোম্পানির কাজ অর্ডার নিলে তারা কাজের পেমেন্ট অবশ্যই ব্যাংকে পরিশোধ করবে।তাছাড়া কর্মীদের বেতনও ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।এছাড়া অফিসিয়াল ব্যাংক স্টেটমেন্ট বিভিন্ন জরুরি কাজে প্রদান করা প্রয়োজন হতে পারে।
◾কর্পোরেট ট্যাক্স নিবন্ধনঃ
কোম্পানি সেটাপ করার পর প্রয়োজন হয় ট্যাক্স নিবন্ধন করার।দুবাই সরকার বিভিন্ন ভাবে সুবিধা করে দিয়েছে কোম্পানিগুলোর জন্য।কর্পোরেট ট্যাক্স সাধারণত ৯%।তবে এটি নির্ভর করে।
বাৎসরিক প্রফিট যদি ৩,৭৫,০০০ দিরহাম এর কম হয় তাহলে কোন ট্যাক্স দিতে হবে না।
এর বেশি প্রফিট হলে ৯% ট্যাক্স পরিশোধ করতে হয়।
তবে ফ্রি জোন কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে কোন ট্যাক্স নেই যদি তারা শুধু আন্তর্জাতিক বানিজ্য ও ফ্রি জোন এরিয়ায় মধ্যে ব্যবসা সীমাবদ্ধ রাখে।
◾খরচঃ
সবকিছুর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে এসব কোম্পানি তৈরীর ক্ষেত্রে খরচ কত হতে পারে।
দুবাইতে সবচেয়ে জনপ্রিয় কোম্পানির ধরণ হচ্ছে কমার্সিয়াল ও ট্যুরিজম।এধরণের কোম্পানি তৈরী করতে খরচ হতে পারে ২০ থেকে ৫০ হাজার দিরহামের মধ্যে যা বাংলাদেশি টাকায় ৭ থেকে ১৬ লাখ টাকার মধ্যে।খরচ নির্ভর করে আপনার কার্যক্রমের উপর।
◾যেসব প্রতিষ্ঠান বিজনেস সেট-আপ নিয়ে করেঃ
সাধারণত Department Of Economic Development এর অফিসগুলো এই ধরণের কাজ গুলো করে থাকে।তবে ভালো সুবিধা ও তথ্য পাওয়ার জন্য দুবাইতে কিছু জনপ্রিয় কোম্পানি আছে Amer Centre নামে।এসব কোম্পানির Department Of Economic Development শাখা রয়েছে যারা আপনাকে পরিপূর্ণ তথ্য ও সেবা দিতে পারে।এছাড়া ডকুমেন্টস ক্লিয়ারিং কোম্পানি যারা এসব নিয়ে কাজ করে, টাইপিং সেন্টার যারা এসব নিয়ে কাজ করে ও বিভিন্ন বিজনেস সার্ভিসেস নামে কোম্পানি রয়েছে ইত্যাদি।
আমরা এই আর্টিকেলে চেষ্টা করেছি দুবাইতে ব্যবসা শুধু করার জন্য বিস্তারিত একটি ধারণা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে।আশা করছি এর দ্বারা আপনারা সামান্য হলেও উপকৃত হবেন।
বলে রাখা ভালো, আমি দুবাইতে একটি ডকুমেন্টস ক্লিয়ারিং সার্ভিস কোম্পানিতে কাজ করছি যারা বিজনেস সেটাপ ও ভিসা প্রসেসিং নিয়ে কাজ করে।
আপনার যে-কোন তথ্য ও পরামর্শের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ধন্যবাদ।
Abdul Hakim
+971566229773.
abdulhakimbd010@gmail.com