দুবাইয়ের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং করার উপায়
সংযুক্ত আরব আমিরাতের শহর দুবাই বর্তমান পৃথিবীর চাকরি প্রত্যাশি মানুষদের কাছে একটি জনপ্রিয় পছন্দের গন্তব্য।তেমনি বাংলাদেশের মানুষের কাছেও এটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা।আজকে আমরা জানবো কিভাবে দুবাইয়ের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং করা যায়।
জেনে নেয়া উচিৎ, দুবাইতে কাজের ভিসার জন্য নিজে নিজে প্রসেসিং করার কোন সুযোগ নেই।তবে নিজে নিজে জব খোঁজার সুযোগ রয়েছে।আপনি দুবাই শহরের কোন কোম্পানি থেকে চাকরি পেলে তারা আপনার ভিসার প্রসেসিং করে দিবে।আবার যারা কোন মাধ্যম থেকে ভিসা কিনে দু্বাই এসে চাকরি করতে চান তাদের জন্য বিস্তারিত নিচে বর্ণনা করা হলো।যদিও ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কিনে নেয়ার কোন অফিসিয়াল নিয়ম নেই।ভিসা শুধুমাত্র চাকরি প্রদানকারী কোম্পানি তার নিয়োগ কৃত কর্মীকে দেয়ার অধিকার রাখেন।কিন্তু অনেক সময় কোম্পানি তার লোকদের নিকট ভিসা দিয়ে তাদের বৈধ উপায়ে অন্য কোম্পানিতে কাজ করার সুযোগ করে দেয়।
নিচে আমরা দুবাই ওয়ার্ক ভিসা প্রসেসিং নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছি।যা বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সামান্য হলেও উপকার হবে ইনশাআল্লাহ।
আপনি যদি দুবাইয়ের বাহিরে বা বাংলাদেশে অবস্থান করেন তাহলে ভিসার জন্য যেসব প্রক্রিয়া করা হবে তা নিন্মরুপ,
🔹জব অফার লেটার ও জব কন্টাক্ট লেটার
🔹ওয়ার্ক পার্মিট বা লেবার কার্ড
🔹লেবার ইন্স্যুরেন্স ও লেবার ফিস
🔹এন্ট্রি পারমিট ভিসা
ভিসা পেয়ে দুবাই আসার পরঃ
🔹Change Status (inside হলে)
🔹মেডিকেল টেস্ট/পরিক্ষা করা
🔹এমিরেটস আইডি টাইপিং
🔹বায়োমেট্রিক রেজিষ্ট্রেশন করা।
🔹ভিসা স্ট্যাম্পিং করা
🔹তাওজীহ করা
🔹ফাইনাল সাবমিশন করা ইত্যাদি।
নিচে ভিসা প্রক্রিয়ার বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
জব অফার ও কন্টাক্ট লেটারঃ
জব অফার ২ ধরণের হয়ে থাকে।একটি কোম্পানি থেকে যে জব অফার দেয়া হয় এবং অন্যটি হলো ভিসা প্রসেসিং করার জন্য ধারাবাহিক সরকারি মন্ত্রণালয়ের অংশ।
এখানের জব অফার ও কন্টাক্ট লেটার হলো দুবাই সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনে আপনার সাথে কোম্পানির সকল চুক্তিনামা জমা করা।জমা করার পর উক্ত চুক্তির একটি কপি আপনাকে দেয়া হবে।একেই বলে জব অফার লেটার ও কন্টাক্ট লেটার।
ওয়ার্ক পারমিট বা লেবার কার্ডঃ
জব অফার লেটার সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়ে সাবমিট করার পর মন্ত্রণালয় যাচাই বাচাই করে সব ঠিকঠাক থাকলে তারা আপনার এই অফার লেটার এপ্রুভ করবে এবং আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট দিবে যাকে লেবার কার্ড ও বলা হয়।এর মেয়াদ ২ মাস।এই সময়ের মধ্যে ভিসার আবেদন করতে হয় বা এন্ট্রি পারমিট আবেদন করতে হয়।
লেবার ইন্স্যুরেন্সঃ
লেবার ইন্স্যুরেন্স মানে শ্রম মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে একটি ইন্স্যুরেন্স করতে হয়।যার মূল্য ১৯০ দিরহাম। কম বেশি হতে পারে।
লেবার ফিসঃ
পূর্বে শুধু জব অফার লেটার সাবমিট করে ওয়ার্ক পারমিট এপ্রুভাল হয়েছে।তারপর লেবার ফিস বা ওয়ার্ক পারমিট ফিস পরিশোধ করে এটাকে এক্টিভেট করতে হয়।
এন্ট্রি পারমিট ভিসাঃ
আপনি দেশে থাকেন বা দুবাইতে, নতুন ভিসা করার ক্ষেত্রে আপনার জন্য একটি এন্ট্রি পারমিট ভিসার আবেদন করতে হবে।দেশে থাকলে একে বলে Outside Entry Permit Visa আর দুবাইতে অবস্থান করলে বলে Inside Entry Permit Visa.
আবেদন করার সর্বোচ্চ ৭ দিনের মধ্যে এই ভিসা পাওয়া যায়।এটির মেয়াদ থাকে ২ মাস।দেশে অবস্থান করলে এই সময়ের মধ্যে দুবাইতে প্রবেশ করতে হবে।আর দুবাইতে অবস্থান করলে এই সময়ের মধ্যে Change Status বা in out করতে হবে।
Change Status:
এটির মানে হলো আপনি যদি আগে থেকে দুবাইতে অবস্থান করেন তাহলে Entry Permit visa বের হওয়ার সাথে সাথে আপনি ভিসায় কনভার্ট হননি।আপনাকে change status বা in out করার মাধ্যমে ভিসার মধ্যে কনভার্ট হতে হবে।
মেডিকেল পরিক্ষাঃ
দেশে থাকলে দুবাই আসার পর আর দুবাইতে থাকলে Change status করার পর বাধ্যতামূলক ভাবে মেডিকেল টেষ্ট করাতে হবে।টেস্টে ফিট হলে পরবর্তী ধাপ আর ফিট না হলে রোগের জন্য চিকিৎসার সুযোগ দিবে অথবা ভিসা ক্যান্সেল করে দেশে পাঠিয়ে দিবে।যার ফলে হয়তো পরবর্তীতে আর কখনো দুবাই আসা যাবে না।
আইডি টাইপিংঃ
মেডিকেল টেষ্ট করার পর বায়োমেট্রিক রেজিষ্ট্রেশন বা আঙ্গুলের চাপ প্রদান করার মাধ্যমে এমিরেটস আইডির জন্য আবেদন করা হয়।তার পরবর্তী ধাপ শেষ হলে আপনি একটি কার্ড পাবেন দুবাইতে থাকার জন্য। যাকে এমিরেটস আইডি কার্ড বলে।
ভিসা স্ট্যাম্পিংঃ
আইডি টাইপিং করার পরের ধাপ হলো ভিসা স্ট্যাম্পিং।আপনি যে শুরুতে ২ মাসের একটি এন্ট্রি পারমিট ভিসা পেয়েছেন স্ট্যাম্পিং করার মাধ্যমে উক্ত ভিসাকে ২ বছরে কনভার্ট করা হয়।মানে দুবাইতে ভিসার মেয়াদ ২ বছর হয়ে থাকে।এখন থেকে আপনি দুবাইতে রেসিডেন্সি ভিসায় যুক্ত হয়েছেন এবং নিশ্চিন্তে চাকরি বা ব্যবসা করা সুযোগ পাচ্ছেন।
তাওজীহঃ
তাওজীহ হলো যারা ছোট প্রফেশনে কাজ করেন তাদের জন্য লেবার মিনিস্ট্রি একটি শর্ট ট্রেইনিং এর ব্যবস্থা করে।যা একদিনে সম্পন্ন করা হয়।কিন্তু বড় প্রফেশনের ক্ষেত্রে তাওজীহর প্রয়োজন হয় না।
ফাইনাল সাবমিশনঃ
এর মানে হলো আপনি শুরুতে যে ২ মাসের একটি লেবার কার্ড বা ওয়ার্ক পারমিট পেয়েছেন তা ভিসার মতো ২ বছরে কনভার্ট করা।মানে আপনি এখানে ২ বছরের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা পেয়েছেন।
আমরা উপরে শুধুমাত্র ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং এর বিস্তারিত আলোচনা করেছি।এই আলোচনার মধ্যে তথ্যগত কোন ভূল খাকার সম্ভাবনা নেই।তবে যদি কোম্পানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বাহিরে অন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হয় সেক্ষেত্রে এ নিয়মের বাহিরেও হতে পারে।
অন্যান্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মধ্যে রয়েছে,
▪️আরবির ঘরের ভিসা (সারভেন্ট, কুক, ড্রাইভার)
▪️মরুভূমি বা খামারের ভিসা
▪️অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ইত্যাদি।
এসব ভিসার ক্ষেত্রে নিয়ম কানুন আলাদা।
আমাদের কোম্পানি Smart Hands for Documents Clearing Service Co দুবাইতে সকল ধরণের কোম্পানি তৈরী ও ভিসা প্রসেসিং নিয়ে কাজ করে।
ভিসা সংক্রান্ত যেকোন তথ্য ও পরামর্শের জন্য কমেন্ট করতে পারেন বা নিচে দেয়া নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।
আপনার প্রবাস জীবন সুন্দর ও নিরাপদ হোক।আল্লাহ হাফেজ।
Writter,
Abdul Hakim
+971566229773
abdulhakimbd010@gmail com.